শুধু হাসা নয়, কান্নারও স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে

প্রদীপ ভট্টাচার্য, ২৩শে জুন, কোলকাতা: খোলাখুলি হাসা যেমন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, তেমনি প্রকাশ্যে কান্নাও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কিন্তু কান্না সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী একটি বিশ্বাস রয়েছে যে কান্না দুর্বলতার লক্ষণ এবং কেবল দুর্বল হৃদয়ের লোকেরাই চোখের জল ফেলে। সম্ভবত পুরুষরা ব্যথার মধ্যেও  কান্না এড়ায়। নারীরা বেশি কান্নাকাটি করে তাই তাদের বেশি আবেগপ্রবণ ও দুর্বল বলে মনে করা হয়।  কিন্তু এই আবেগের বিষয়ে বিজ্ঞানের অন্য কিছু বলার আছে।  তারা বলে যে মাঝে মাঝে কান্না আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।  হ্যাঁ, হাসির মতোই কান্নারও উপকারিতা রয়েছে। কান্না আবেগপ্রবণ হওয়ার লক্ষণ হতে পারে তবে দুর্বল হওয়ার নয়।  আসুন জেনে নিই কান্না আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকার করে।

গবেষণা কি বলে?

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি ২০২১ সালে আমেরিকান মহিলা এবং পুরুষদের উপর একটি গবেষণা পরিচালনা করে যেখানে মহিলারা প্রতি মাসে ৩.৫ বার কাঁদেন এবং আমেরিকান পুরুষরা প্রতি মাসে প্রায় ১.৯ বার কাঁদেন।  গবেষকরা বিশ্বাস করেন যে লোকেরা কেবল দুঃখের সময়ই চোখের জল ফেলে না, তারা যখন খুশি হয় তখন তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতেও অশ্রু ফেলে।

প্রতিটি অশ্রু ভিন্ন

বিশেষজ্ঞরা অশ্রুকে তিনটি ভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন - প্রতিবর্তিত অশ্রু, ক্রমাগত অশ্রু এবং মানসিক অশ্রু।  রিফ্লেক্স টিয়ার এবং অবিরাম অশ্রু চোখের ধুলো এবং ময়লা অপসারণ এবং সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।  চোখের জলে প্রায় ৯৮% জল থাকে।

কান্নার উপকারিতা

১. মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক

কান্না আমাদের শরীরে কর্টিসল নামক হরমোনের মাত্রা কমিয়ে দেয়, যা আমাদের মানসিক চাপ কমায়। ফলে আমরা স্বস্তি অনুভব করি এবং মানসিক চাপ কম থাকি।

২. মানসিক স্বস্তি

যখন আমরা কান্নাকাটি করি, তখন আমাদের অনুভূতি প্রকাশ পায় এবং আমাদেরকে শান্ত করার এবং নিজেকে নিরাময় করার উপায় সরবরাহ করে।

৩. হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী

কান্না আমাদের শিরায় রক্ত ​​সঞ্চালন বাড়ায় এবং আমাদের হার্টকে সুস্থ রাখে। এছাড়াও, কান্না আমাদের হৃদস্পন্দন স্থিতিশীল করে এবং রক্তচাপ কমায়।

৪. ভালো ঘুম হতে সহায়ক

কেউ কেউ মানসিক অস্থিরতার কারণে রাতে ঘুমায় না।  এমতাবস্থায় কান্না হলে রাতে ভালো ঘুম হয় কারণ কান্না মনকে শান্ত করে।

৫. চোখের জন্য ভাল

কান্না শুধু মস্তিষ্কের জন্যই নয় চোখের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। কান্নার সময় চোখের জল বের হলে চোখের ভিতরে থাকা অনেক ব্যাকটেরিয়া বেরিয়ে আসে যা অনেক রোগ থেকে চোখকে রক্ষা করতে পারে।