রক্তে শর্করার মাত্রা কেন বেড়ে যায় চিনি ছাড়াও চা পান করলেও

ঠান্ডার দিনে চা সবাই পছন্দ করে। কিন্তু আপনি কি জানেন যে চা খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা কেন বেড়ে যায়? যদি ভেবে থাকেনা যে এটি চায়ে উপস্থিত চিনির কারণে হয় তবে কেন চিনি ছাড়া চা পানকারীদের শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। 

আসলে দুধ ছাড়াও চায়ে এমন অনেক উপাদান থাকে যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। যদি ডায়াবেটিক রোগী হলে, তবে  চা খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিৎ। তবে একটি চা থেকে অন্য চায়ের মধ্যে কমপক্ষে ২  ঘন্টার ব্যবধান থাকা উচিৎ। 

 রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধির কারণগুলি নিয়ে আলোচনা করব।  এই বিষয়ে আরও ভাল তথ্যের জন্য, লখনউয়ের নিউট্রিওয়াইজ ক্লিনিকের পুষ্টিবিদ নেহা সিনহার কী বলছেন দেখে নেওয়া যাক

 চায়ে ফুল ফ্যাট দুধ ব্যবহারে চিনির মাত্রা বাড়তে পারে। ডায়াবেটিস রোগীরা প্রায়ই মনে করেন চিনি ছাড়া চা পান করলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়বে না, কিন্তু তা নয়, চায়ে উপস্থিত ফুল ফ্যাট দুধও রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।

 ঠান্ডার দিনেও মানুষ জলের পরিমাণ কমিয়ে দেয়।  আমরা যদি পর্যাপ্ত জল পান করি তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

  চা আয়রন শোষণ করতে পারে না: চায়ে রয়েছে ট্যানিন এবং পলিফেনল নামক উপাদান, যা আয়রনকে সম্পূর্ণরূপে শরীরে শোষিত হতে দেয় না এবং শরীরের আয়রন শোষণ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। 

আয়রন শোষণের সমস্যা বেশি হয় যারা খাওয়ার পরপরই চা খান।  চায়ে উপস্থিত ক্যাফেইন আয়রন সামগ্রীতে খারাপ প্রভাব ফেলে এবং হিমোগ্লোবিন হ্রাস করতে পারে।

  চায়ে গুড়ের অতিরিক্ত ব্যবহার ভালো নয়:

 ঠান্ডার দিনে শরীরের শীতলতা দূর করতে মানুষ চায়ে গুড় পান করে, গুড়ের প্রভাব গরম।  গুড় খাওয়া শরীরে উষ্ণতা দেয় কিন্তু রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে। 

ডায়াবেটিস রোগীদের গুড়ের চা এড়িয়ে চলা উচিৎ।  গুড় চিনির একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প, তবে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না এমন কোনো প্রমাণ নেই, গুড় শুধুমাত্র মিষ্টি জিনিসের মধ্যে গণনা করা হয়।

 শীতকালে অতিরিক্ত চা খাওয়া: ডায়াবেটিক রোগীরা ঠান্ডার দিনে বেশি চা পান করেন, যা তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় এবং হিমোগ্লোবিন কমাতে পারে। 

 যদি ঠান্ডার দিনে বেশি চা খান, তবে ওষুধের ডোজ নেওয়ার পরেও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হবে।

 ডায়াবেটিস রোগীর কী ধরনের চা পান করা উচিৎ : ডায়াবেটিস রোগীদের ভেষজ চা খাওয়া উচিৎ,যাতে দুধ ও চিনির পরিবর্তে আদা, লেবু, এলাচ, দারুচিনি, গোল মরিচ ব্যবহার করা হয়।

 ভেষজ চা থেকে শরীর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাবে এবং যদি আপনি সাধারণ চায়ের কথা বলেন, তবে আপনার দিনে দুই কাপের বেশি চা খাওয়া এড়াতে হবে। 

 লেমনগ্রাস চা বা গ্রিন টিও খেতে পারেন, তবে দিনে দুই থেকে তিন কাপের বেশি চায়ের সংখ্যা রাখবেন না।

 চিনি, চিনিমুক্ত বা দুধের চা না খেয়ে হার্বাল চা খান।  ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করতে থাকুন।