এই ৫টি কারণে হতে পারে শিশুদের মুখ থেকে দুর্গন্ধ, জেনে নিন প্রতিরোধে কী করবেন
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হওয়া স্বাভাবিক কারণ এটি সারারাত মুখের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়ার প্রতিক্রিয়ার কারণে হয়। এটি ধুয়ে ফেলা বা ব্রাশ করার পরে নিখুঁত হয়ে যায়। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় ব্রাশ করার পরও নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর হয় না বা সারাদিন থাকে। শিশুদের ক্ষেত্রে এই ধরনের ঘটনা বেশি দেখা যায়। যদি আপনার সন্তানের ক্ষেত্রে এটি হয়, তবে আপনার বোঝা উচিৎ যে এটি স্বাভাবিক নয়। এই সমস্যাকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় হ্যালিটোসিস। ডেন্টাল কেয়ার ক্লিনিক, বৈশালীর ডাঃ সোনম গুপ্তার মতে, মুখের স্বাস্থ্যবিধির যত্ন না নেওয়া, বেশি দুর্গন্ধযুক্ত খাবার খাওয়া বা শুষ্ক মুখ ইত্যাদি কারণে নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ বা দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে। কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখলে এগুলো সংশোধন করা যায়। কিন্তু তারপরও যদি দুর্গন্ধ থেকে যায়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
1. অনুপযুক্ত ফ্লসিং এবং ব্রাশিং
যদি শিশুর মুখ থেকে দুর্গন্ধ হয়, তবে এর প্রধান এবং সাধারণ কারণ হল মুখের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে অক্ষমতা। আপনার বাচ্চারা যদি প্রতিদিন ব্রাশ করার পরিবর্তে মাঝে মাঝে ব্রাশ করে এবং মাঝে মাঝে ছেড়ে দেয়। তাই তাদের দাঁতের প্লাক ভালোভাবে সরাতে পারে না। আসলে দাঁত ভালোভাবে পরিষ্কার না করলে অবশিষ্ট খাবার দাঁত, জিহ্বা বা মাড়িতে লেগে থাকে। যার কারণে মুখের ব্যাকটেরিয়াগুলো দুর্গন্ধ তৈরি করতে শুরু করে।
করণীয়ঃ এই সমস্যা এড়াতে আপনার শিশুকে অবশ্যই দিনে দুবার ব্রাশ করতে হবে।যখনই সে খাবার খাবে তখনই তার মুখ ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন।
2. শুষ্ক মুখের সমস্যা
যদি আপনার শিশুর বুড়ো আঙুল বা কোনো আঙুল চুষতে থাকে, তাহলে মুখ শুকিয়ে যেতে পারে। এতে মুখের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে। মুখে পর্যাপ্ত লালা না থাকলে মুখের শুষ্কতা আরও বেড়ে যায়। এই কারণে দুর্গন্ধ সাধারণ হয়ে ওঠে।
কী করবেন: আপনার শিশুর মুখ শুকনো থাকলে তাকে হাইড্রেটেড রাখুন। প্রচুর জল পান করতে থাকুন। আপনি তাদের আইস কিউব এবং চিনি-মুক্ত আঠাও দিতে পারেন।
3. মুখের ব্যাকটেরিয়া
মুখের ভিতরে জিহ্বাই একমাত্র জায়গা যেখানে ব্যাকটেরিয়া থামে। শিশুদের দাঁতে দাঁত থাকলে এর কারণেও প্লাক জমতে পারে। এর ফলে আপনার শিশুর মুখ থেকে খুব দুর্গন্ধও আসতে পারে।
কী করবেন: বাচ্চাদের ব্রাশ করার পাশাপাশি তাদের জিহ্বা পরিষ্কার করতে শেখান। আপনি বাচ্চাকে ব্রাশ বা প্লাস্টিকের ক্লিনজার ব্যবহার করে জিহ্বা পরিষ্কার করতে দিতে পারেন। এ কারণে শিশুর জিহ্বায় সাদা স্তরও উঠে যায়।
4. মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়া
শিশুরা যখন সর্দি হয় বা নাক বন্ধ থাকে তখন প্রায়ই তাদের মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়। মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার সময় পর্যাপ্ত লালা উৎপন্ন হয় না। যার কারণে শুষ্ক মুখের সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং এর কারণে মুখ থেকে দুর্গন্ধ আসতে পারে।
কী করবেন: আপনার শিশুর মুখের শ্বাস-প্রশ্বাসের কারণ খুঁজে বের করা উচিৎ। তার যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে প্রথমে সেই সমস্যার সমাধান করা উচিৎ।
5. ওরাল ইনফেকশন
আপনি যদি আপনার বাচ্চাদের ভাল যত্ন না নেন, তাহলে তাদের মাড়িতে সংক্রমণ হতে পারে। যার কারণে তাদের মুখ থেকে একটি অদ্ভুত গন্ধ আসতে পারে।
কী করবেন: সংক্রমণের ক্ষেত্রে আপনার সন্তানকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
অনেক সময় শিশুরা কোনো ওষুধ খায় বা তাদের টনসিল হয়। তারপরও মুখ থেকে এমন দুর্গন্ধ আসতে পারে। আপনার সন্তানকে যথাযথ মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি শেখানোর চেষ্টা করা উচিৎ।
No comments: