Politics

[Politics][bleft]

West Bengal

[West Bengal][grids]

World

[World][bsummary]

National

[National][twocolumns]

একমাত্র সচেতনতাই রোধ করতে পারে ডেঙ্গু জ্বরের প্রবণতা



প্রদীপ ভট্টাচার্য্যঃ গত কয়েক বছর ধরে আমাদের করোনা মহামারীর সঙ্গে আরও একটি মহামারী রোগের মোকাবিলা করতে হচ্ছে, তা হল ডেঙ্গুজ্বর। প্রধানত বর্ষার সময় এ রোগের প্রকোপ বেশি দেখা গেলেও, বছরের অন্যান্য সময়ও ডেঙ্গু হতে পারে। সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে গত কয়েকবছরে এ রোগে মৃত্যুর হার কমলেও, এ বছর  ডেঙ্গুর প্রকোপ আবার শুরু হয়েছে।


ডেঙ্গু রোগের ভাইরাসটির বাহক হলো এডিস মশা। এই মশা ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের দেহ থেকে জীবাণু নিয়ে তার কামড়ের মাধ্যমে অন্য সুস্থ মানুষকে সংক্রমিত করে। এই মশা দিনের বেলা মানুষকে কামড়ে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটায়। এরা আবদ্ধ ছোট ছোট জলাধারে বংশবৃদ্ধি করে। সাধারণত ফুলদানি, ফুলের টব, কৌটো, ভাঁড়, ডাবের খোসার জমা জলে এরা ডিম পাড়ে এবং সেই ডিম থেকে পরবর্তী প্রজন্ম গড়ে ওঠে।


এডিস মশা কাউকে কামড়ানোর এক সপ্তাহের মধ্যে সাধারণত ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ দেখা দেয়। লক্ষণগুলি হলো উচ্চ তাপমাত্রা, চোখের পেছনে, মাংসপেশিতে ও হাড়ে ব্যথা। এছাড়া যদি হিমোরেজিক ফিভার বা রক্তক্ষরণযুক্ত ডেঙ্গুজ্বর হয় তবে ত্বক, মাড়ি, নাক ও বমি বা পায়খানার সঙ্গে রক্তপাত হতে পারে।


এগুলি হলে রোগীর শিরায় স্যালাইন দেওয়া হয় ও রক্তের প্লেটলেটও দেখা হয়। হেমোরেজিক ফিভারে মৃত্যুর ঝুঁকি থেকে যায় তাই এ রোগে বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করতে হয়।


সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরে রোগীকে বাসায় রেখে চিকিৎসা করলেও চলে, তবে রক্তক্ষরণ শুরু হলে বা অন্য কোনো ধরনের জটিলতা দেখা দিলে রোগীকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করাই উচিত।


বাড়িতে থাকলে রোগীকে সবসময় মশারির মধ্যে থাকতে হবে, অন্যথায় তার দেহ থেকে জীবাণু মশাবাহিত হয়ে অন্য কাউকে আক্রান্ত করতে পারে। 


শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য শুধুমাত্র প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধই ব্যবহার করা যাবে।


রোগী সব ধরনের খাবার খেতে পারলেও তাকে জলীয় খাদ্য বেশি করে খেতে হবে।


ডেঙ্গু সম্পর্কে প্রতিনিয়ত আমাদের তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত এ রোগের কোনো কার্যকর টিকা আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। আর তাই ডেঙ্গুর হাত থেকে রেহাই পাবার জন্য প্রতিরোধ ব্যবস্থাই সবচেয়ে ভালো পন্থা।


প্রথমে আক্রান্ত রোগীর যথাযথ চিকিৎসা করতে হবে।


রোগীর জ্বর সারার পরও কমপক্ষে সাত দিন মশারির ভেতর থাকতে হবে।


এডিস মশা নির্মূলের জন্য বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। দেখতে হবে জমা জল যেন কোন জায়গায় না থাকে। মশার লার্ভা যাতে না জমে তার জন্য সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। মশা মারার ওষুধ নিয়ম করে স্প্রে করতে হবে।


সর্বোপরি জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। মানুষ সচেতন না হলে যেমন কোনোভাবেই মশার বৃদ্ধি রোধ করা যাবে না, তেমনি রোধ করা যাবে না ডেঙ্গুর প্রবণতাও। ডেঙ্গু রোধ করার প্রধানতম ও একমাত্র অস্ত্র হলো সচেতনতা। আর আমরা যতদিন না সকলে একসঙ্গে মিলে  সচেতন হতে পারব, ততোদিন ডেঙ্গু রোধ করা সম্ভব হবে না।


ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।

No comments: