এই নিয়মগুলো মেনে ছুলি দূর করুন
প্রদীপ ভট্টাচার্য্যঃ ছুলি নামক চর্মরোগের নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন। বৃষ্টি ও গরমে এই রোগ বেশী দেখা যায়। এটি একটি ছত্রাকজনিত রোগ। ছোট বড় সব বয়সীরাই এই রোগে আক্রান্ত হয়।
এটি বেশি দেখা যায় শরীরের বুক, পিঠ, গলা, হাত ও অন্যান্য উন্মুক্ত অংশে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে এটি মুখেও দেখা দিতে পারে।
ছুলি হলে আক্রান্ত স্থানে সাদা বা বাদামী ছোটো ছোটো ছোপ ছোপ দাগ দেখা দেয়। এটি ফর্সা ত্বকে গাঢ় ও শ্যামলা ত্বকে হালকা রঙের হয়ে থাকে। আর গরম বাড়লে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া বেড়ে যায়। অনেক সময় চামড়াও ওঠে।
এই রোগের কারণ হলো গরম, আর্দ্র ও স্যাঁতসেতে আবহাওয়া, প্রচুর ঘাম হওয়া, তৈলাক্ত ত্বক, দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েড ও অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ খাওয়া। এছাড়া অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণেও এটি হতে পারে। সংক্রমিত ব্যাক্তির সংস্পর্শে এলে ও তার ব্যবহৃত জিনিস ব্যাবহার করলেও এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
যেসব জায়গায় বেশী মানুষের ভীড় থাকে, যেমন জেলখানা, হোস্টেল, ব্যারাক, মাদ্রাসা ইত্যাদি জায়গায় এই রোগ তুলনামূলক ভাবে বেশি দেখা যায়।
এটি গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে বেশি দেখা যায়।
এখন জেনে নিই এই রোগ প্রতিরোধে কী কী করণীয়।
আপনি যদি দীর্ঘদিন অ্যান্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খেতে থাকেন, তবে তা থেকে বিরত থাকতে হবে।
শরীরের যেসব স্থানে ঘাম বেশি হয় সেসব স্থান পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন।
ঘামে ভেজা পোশাক তাড়াতাড়ি পাল্টে ফেলুন। তাছাড়া সেগুলো না ধুয়ে আবার ব্যবহার করবেন না।
গরমকালে সুতির পাতলা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে।
গরমের সময় দিনে দু থেকে তিনবার চান করলে ভালো হয়, এবং চানের পর গা ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে।
অন্যের ব্যবহৃত তোয়ালে, গামছা ইত্যাদি যেমন ব্যবহার করা যাবেনা তেমনি একই ক্ষুর বা ব্লেডে একাধিক ব্যক্তির মাথা বা দাঁড়ি কামানোও উচিৎ হবেনা।
প্রচুর পুষ্টিকর খাবার ও জলপান করতে হবে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
সব আবহাওয়ায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
এসবের পরেও আপনি যদি এই রোগে আক্রান্ত হন, তবে চিন্তার কিছু নেই। সঠিক চিকিৎসায় ছুলি নিরাময় হয়। এর জন্য একজন বিশিষ্ট চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন এবং সেইমতো ওষুধ খান ও নিয়ম মেনে চলুন। আপনি অবশ্যই ছুলিমুক্ত হবেন।
No comments: