এই উপায় গুলি জেনে নিন আয়রনের অতিরিক্ত ঘাটতি দূর করার জন্য
আয়রন আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় খনিজগুলির মধ্যে একটি। আয়রনের ঘাটতির কারণে শরীর অনেক রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এটি শরীরের অনেক অংশকে প্রভাবিত করে।
আয়রনের অভাবে কম হিমোগ্লোবিন এবং রক্তের ক্ষয় হয়। শরীরে অক্সিজেনের অভাব মেটাতে এবং সঠিক প্রবাহ বজায় রাখতে আয়রন প্রয়োজন। আয়রনের অতিরিক্ত ঘাটতি হলে রক্তশূন্যতার মতো রোগ হয়।
জেনে নিন আয়রনের ঘাটতির কারণে কী কী রোগ হয় এবং তাদের লক্ষণ।
আয়রনের ঘাটতির লক্ষণ:
আয়রনের অভাবে ক্লান্তি, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা।
এর ফলে শ্বাসকষ্ট এবং অস্থিরতা দেখা দেয়।
শরীরে আয়রনের পরিমাণ কম হলে চুল পড়া শুরু হয়।
মেজাজ খিটখিটে ভাব এবং ত্বকের রং বিবর্ণ হতে শুরু করে।
আয়রন কম থাকায় ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় এবং নখের রং সাদা হয়ে যায়।
বুকে ব্যথা এবং ধড়ফড় শুরু হয়।
অনেক সময় আয়রনের অভাবে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে আয়রনের ঘাটতির কারণে চিন্তা করার ক্ষমতাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আয়রনের অভাবজনিত রোগ:
দুর্বলতা ও ক্লান্তি:
শরীরে আয়রনের অভাবের কারণে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে হিমোগ্লোবিন তৈরি হয় না। যার কারণে আপনি সারাদিন ক্লান্ত এবং দুর্বল বোধ করতে পারেন।
অনেক সময় সমস্যা বেড়ে গেলে দৈনন্দিন কাজ ঠিকমতো করতে পারেন না। এমন পরিস্থিতিতে মনোযোগ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। হিমোগ্লোবিন কম হলে পেশী এবং টিস্যুতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছায় না। যার কারণে আপনি ক্লান্ত বোধ করেন।
হার্ট এবং ফুসফুসের সমস্যা: যারা রক্তশূন্যতার অভিযোগ করেন অর্থাৎ শরীরে আয়রনের অভাব। তাদের হার্ট ও ফুসফুস সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে।
আয়রনের ঘাটতি হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসে নানা জটিলতার সৃষ্টি করে। হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন দ্রুত হওয়ার কারণে অনেক সময় হার্ট ফেইলিউরের ঝুঁকি থাকতে পারে।
এছাড়াও আয়রনের ঘাটতির কারণে জন্মের সময় শিশুর অনেক সমস্যা হতে পারে। আয়রনের ঘাটতি শিশুর সময়ের আগে জন্ম নেওয়ার ঝুঁকিতেও ফেলে। গর্ভাবস্থায় আয়রনের ঘাটতি হলে ওজন বৃদ্ধি, মানসিক বিকাশ এবং শিশুর আয়রনের ঘাটতির ঝুঁকি হতে পারে।
চুল ও চর্মরোগ:
আয়রনের ঘাটতির কারণেও শরীরে চুল ও ত্বকের সমস্যা হয়। আয়রনের অভাবে ত্বকে শুষ্কতা ও দাগ দেখা দিতে থাকে। যার কারণে ত্বক প্রাণহীন হয়ে যায় এবং রং বিবর্ণ হতে থাকে। আয়রনের অভাবে চুল পড়ে এবং খুশকি হয়। আয়রনের অভাবে চুলও সাদা হতে শুরু করে।
হৃদরোগ:
শরীরে আয়রনের অভাবে হিমোগ্লোবিন কমতে শুরু করে। যার কারণে শরীরের সব অংশে সঠিক পরিমাণে অক্সিজেন পৌঁছায় না।
আয়রনের ঘাটতির ফলে হার্টে কম অক্সিজেন পৌঁছায়। এক্ষেত্রে হার্টকে আরও পরিশ্রম করতে হয়। দীর্ঘমেয়াদী আয়রনের ঘাটতি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
রক্তস্বল্পতা:
আয়রনের অভাবে শরীরে রক্তশূন্যতার সমস্যা হয়। অ্যানিমিয়া সবচেয়ে সাধারণ, বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে। এর কারণ হতে পারে খাদ্যতালিকায় আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের অভাব, গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত রক্তপাত ও পিরিয়ড।
যখন রক্তস্বল্পতার শিকার হতে হয়, তখন ক্লান্তি, কাজ করতে অসুবিধা এবং শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সমস্যা হয়। ইমিউন সিস্টেমও এর দ্বারা প্রভাবিত হয়।
প্রধান উৎস:
আয়রনের উৎস:
আয়রনের অভাব হলে লাউ, কুমড়োর বীজ, ক্যাপসিকাম, সবুজ শাক, পালং শাক, আলু, বীটরুট, ডালিম, মটরশুঁটি এবং কিডনি বিন খেতে পারেন। খাবারে অবশ্যই কিশমিশ এবং অন্যান্য বাদাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
আবার মাছের মতো সামুদ্রিক খাবার খেতে পারেন। এ ছাড়া মাংস, মুরগির মাংস, মাটন ও ডিমও খেতে পারেন।
No comments: