Politics

[Politics][bleft]

West Bengal

[West Bengal][grids]

World

[World][bsummary]

National

[National][twocolumns]

মৃগী রোগীকে সুস্থ রাখতে চাই সঠিক চিকিৎসা ও সেবার সাথে একটু সহানুভূতি ও সহমর্মিতা


প্রদীপ ভট্টাচার্য্যঃ মৃগীরোগ সম্পর্কে নিশ্চয়ই অবহিত আছেন। মৃগী স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতাজনিত একটি রোগ। এ রোগের সাধারণ লক্ষণ হলো খিঁচুনি। সাধারণত মস্তিষ্কের কোষগুলি একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে সচল রাখে। এখন কোনো কারণে মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের উদ্দীপক ও নিবৃত্তিকারক অংশদুটির কার্যপ্রণালীর ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেলে, মৃগীরোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে।


একজন সুস্থ ব্যক্তি যখন হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে কাঁপুনি বা খিচুনির শিকার হন, চোখ মুখ উল্টে ফেলেন, চোখের পাতা স্থির হয়ে যায়, একদৃষ্টিতে চেয়ে থাকেন বা অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন, তখন তাকে মৃগী রোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।


মৃগীরোগ নিয়ে এখনও আমাদের সমাজে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। অনেক সময় বলা হয় যে, এটা ভুত-প্রেত বা দুষ্ট আত্মা দ্বারা সৃষ্ট। এটা একদমই সত্য নয়, এর সঙ্গে অতীত জীবনের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি একটি বৈজ্ঞানিক স্নায়বিক বিষয়, যা সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করা যেতে পারে।


মৃগীরোগ হবার সুনির্দিষ্ট কোনও কারণ এখনো বের করা সম্ভব হয়নি। তবে কতকগুলো কারণ আছে যেগুলো থেকে মৃগীরোগ হবার আশঙ্কা থাকে।


যেমন, জন্মের আগে, জন্মের সময় বা জন্মের পরে মস্তিষ্কের আঘাত। কোনো ধরনের সংক্রমনের ফলে মস্তিষ্কের ক্ষতি। মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে প্রতিবন্ধকতা। মস্তিষ্কে টিউমার। অধিকমাত্রায় জ্বর। পুষ্টির অভাব মস্তিষ্কের প্রদাহ ইত্যাদি।


এটা দেখা গেছে যে, ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ মৃগীরোগ উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত।


অনেকেই মৃগীরোগীর খিঁচুনির সময় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এটা কখনই উচিত নয়। কখনো আতঙ্কিত বা ভীত হবেন না। 


রোগীর খিঁচুনির সময় তাকে বাধা দেবেন না বা ধরার চেষ্টা করবেন না। এতে রোগী ও আপনি দুজনেই আহত হতে পারেন। 


কখনোই রোগীর নাক বা মুখ চামড়ার তৈরি জুতো বা চামড়ার তৈরি অন্য কিছু, লোহার শিক ইত্যাদি দিয়ে চেপে ধরবেন না। এতে রোগীর উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশী হবে।


রোগী পুরোপুরি সচেতন না হওয়া পর্যন্ত জল বা অন্য কোনো পানীয় দেবেন না। 


সাধারণত খিঁচুনি কিছুক্ষণ থাকার পর রোগী গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। 


তবে মৃগী রোগীর খিঁচুনি যদি পাঁচ মিনিটের বেশি হয়, তার যদি শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হয়, বেশিক্ষণ ধরে অচেতন থাকে, বা খিঁচুনির সময় কোনোভাবে আহত হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।


ডাক্তারি মতে অ্যান্টি-এপিলেপটিক ওষুধ বেশিরভাগ মৃগী রোগীর খিঁচুনির তীব্রতা ও পুনরাবৃত্তির হার হ্রাস করতে সাহায্য করে। যদিও এই ওষুধ মৃগীরোগের নিরাময় করতে পারেনা। মৃগী রোগের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী।

চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ প্রথমে অল্প মাত্রায় প্রয়োগ করে তারপর রোগী এবং রোগের প্রকৃতি দেখে মাত্রা বৃদ্ধি করতে হবে। কোনও উন্নতি না দেখা গেলে চিকিৎসক ওষুধ পরিবর্তন করতে পারেন। রোগী যদি অন্য কোনও রোগের ওষুধ খান তাহলে তা চিকিৎসককে অবশ্যই জানাতে হবে। সেরকম কোনো উন্নতি না দেখা দিলে চিকিৎসক ওষুধ পরিবর্তন করতে পারেন। তাঁর পরামর্শ ছাড়া ওষুধ পরিবর্তন ও বন্ধ করা যাবে না।


মৃগী রোগে আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষই সঠিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবার সাথে একটু সহানুভূতি ও সহমর্মিতা পেলে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন।

No comments: