জেনে নিন, পাইলসের লক্ষণগুলি এবং কীভাবে আপনি এটি দূর করবেন

পাইলস একটি মারাত্মক রোগ, যাতে একজন ব্যক্তিকে তার দৈনন্দিন কাজকর্মে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য এবং শক্ত মলের কারণে পাইলসের সমস্যা শুরু হতে পারে।

মলদ্বার এবং মলমূত্রের ফোড়াগুলি পাইলস নামে পরিচিত।হেমোরয়েডের অনেক কারণ থাকতে পারে।কিন্তু পাইলস হলে ব্যক্তির মলত্যাগে বড় সমস্যা হয়। এটি একটি সাধারণ সমস্যা এবং প্রতি চারজনের মধ্যে তিনজনকে কোনো না কোনো সময় পাইলসের সমস্যায় পড়তে হয়।ভালো কথা হলো পাইলসের চিকিৎসা আছে এবং আধুনিক চিকিৎসায়ও এটি অপারেশন করা হয়, অন্যদিকে আয়ুর্বেদ ও ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমেও পাইলসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

পাইলসের প্রকারভেদ

হেমোরয়েড প্রধানত দুই প্রকার। উভয় ধরনের পাইলসেই রোগীর অনেক সমস্যা হয়-

বাহ্যিক পাইলস- মলদ্বারের চারপাশের ত্বকের নিচে এই ধরনের পাইলস হয়ে থাকে।

অভ্যন্তরীণ পাইলস অর্থাৎ এই ধরনের পাইলস ব্যক্তির মলদ্বারে থাকে। এগুলি দেখা বা অনুভব করা যায় না, তবে মলত্যাগের সময় ব্যথাহীন রক্তপাত হতে পারে।

পাইলসের লক্ষণ-

পাইলসের ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির মলত্যাগে অসুবিধা হয়। পাইলসের সমস্যা বেশি হলে মানুষের বসতেও সমস্যা শুরু হয়। এ ছাড়া এমন অনেক লক্ষণ রয়েছে যা পাইলসের দিকে নির্দেশ করে।

বাহ্যিক পাইলসের ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি রক্তপাত অনুভব করতে পারেন।

বাহ্যিক অর্শ্বরোগে মলদ্বার বা মলের চারপাশে ফোলাভাব থাকতে পারে।

বাহ্যিক পাইলস খুবই বেদনাদায়ক এবং অস্বস্তিকর।

বাহ্যিক অর্শ্বরোগে, মলদ্বারের চারপাশে চুলকানি এবং জ্বালাপোড়া অনুভূত হতে পারে।

অভ্যন্তরীণ হেমোরয়েড ফুলে

যেতে পারে। অভ্যন্তরীণ অর্শ্বরোগে মলদ্বারের কাছে একটি পিণ্ড অনুভূত হতে পারে।

কখনও কখনও অভ্যন্তরীণ অর্শ্বরোগে গুরুতর ব্যথা অনুভব করা যেতে পারে।

অনেক ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ হেমোরয়েডের সময় ব্যথাহীন রক্তপাত হতে পারে।

এই সময় মলত্যাগের জন্য ঘন ঘন তাগিদ অনুভব হলেও কিন্তু মলত্যাগ হয় না

হেমোরয়েডের

কারণে- 

পাইলসকে আয়ুর্বেদে 'অর্শ' বলা হয়। পাইলস বাত, পিত্ত এবং কফ এই তিনটি দোষের দূষণের কারণে হয়। এই কারণেই এটিকে আয়ুর্বেদে ত্রিদোষজা রোগও বলা হয়।অনেক লোকের মধ্যে, অর্শ্বরোগ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চলে যায়। এর পাশাপাশি আরও অনেক কারণ রয়েছে।

অনেক লোককে তাদের কাজের কারণে অনেক ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় এবং দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার ফলেও পাইলস হতে পারে।

ভারী ওজন তোলাও পাইলসের কারণ হতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্য পাইলসের একটি বড় কারণ। কোষ্ঠকাঠিন্যে, মল শুষ্ক ও শক্ত হয়ে যায়, যার কারণে ব্যক্তির মলত্যাগে অসুবিধা হয়। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার কারণে সেখানকার রক্তনালীর ওপর চাপ পড়ে। যার কারণে এগুলি ফুলে যায় এবং ঝুলে যায় এবং এদেরকে পাইলসের আঁচিল বলে।

বেশি ভাজা ও মসলাযুক্ত খাবারও পাইলসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

সঠিকভাবে মলত্যাগ না করা এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার না খাওয়াও পাইলসের কারণ হতে পারে।

প্রসবের সময় পায়ুপথে অতিরিক্ত চাপের কারণে মহিলাদের অর্শ্বরোগের ঝুঁকিও থাকে।

শারীরিক পরিশ্রমের অভাবেও পাইলস হতে পারে।

ধূমপান এবং অ্যালকোহল সেবনের কারণেও হেমোরয়েড হতে পারে।

পাইলসের তাৎক্ষণিক উপশমের জন্য কী করবেন?

দুই চা চামচ ইপসম লবণ এবং গ্লিসারিন মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন। এই ঘরোয়া প্রতিকার যন্ত্রণাদায়ক পাইলস কমাতে সাহায্য করে এবং তাৎক্ষণিক উপশম দিতে পারে। এটি প্রদাহেও উপশম দেয়।

পাইলসের ঘরোয়া প্রতিকার 

পাইলসের

অনেক ধরনের ঘরোয়া প্রতিকার রয়েছে। এর মধ্যে হলুদ অন্যতম।হলুদকে বৈশিষ্ট্যের খনি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পাইলসের ক্ষেত্রে হলুদ খুবই উপকারী প্রমাণিত হতে পারে।এরকম আরও অনেক ঘরোয়া প্রতিকার রয়েছে, যা ব্যবহার করে আপনি পাইলসের উপশম পেতে পারেন।

হলুদের গুঁড়া এবং নারকেল তেল

আয়ুর্বেদিক মতে, পাইলসের চিকিৎসায় নারকেল তেল অনেক রোগের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নারকেল তেলে এক চিমটি হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে হাল্কা হাতে বা তুলা দিয়ে পাইলসের জায়গায় লাগান। এটি দিয়ে আপনি মলদ্বারের বাইরের অংশে হওয়া অর্শ্বরোগে উপশম পেতে পারেন।

হলুদ এবং অ্যালো ভেরা জেল

অ্যালোভেরা তার শীতল প্রভাবের জন্য পরিচিত। হলুদের গুঁড়োর সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে নিয়মিত রাতে ঘুমানোর আগে মলদ্বারের অংশে  লাগালে আরাম পাওয়া যায়। অন্তত দুই সপ্তাহ একটানা এটি করে গেলে উপকার পাবেন।  

দেশি ঘি এবং হলুদ 

দেশি ঘি তার বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। দেশি ঘি নিয়মিত খেলে অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।পাইলসের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে দেশি ঘিতে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে পাইলসের জায়গায় নিয়মিত লাগালে কয়েক দিনের মধ্যেই পাইলসের সমস্যা চলে যাবে।

হলুদ, ছাগলের দুধ এবং কালো লবণ 

উপসর্গ থেকে উপশম পেতে, এক কাপ ছাগলের দুধের সাথে এক চা চামচ হলুদ এবং আধা চা চামচ কালো লবণ মিশিয়ে  নিয়মিত খেলে কয়েক দিনের মধ্যে পাইলসের উপশম হয়।

বাথ টবে হলুদ

একটি স্নানের টবে দুই চা চামচ হলুদ মেশান এবং তারপরে ১৫ মিনিটের জন্য বসুন।এভাবে কয়েকদিন নিয়মিত করলে পাইলসের উপশম পাওয়া যায়।

প্র ভ