Politics

[Politics][bleft]

West Bengal

[West Bengal][grids]

World

[World][bsummary]

National

[National][twocolumns]

মাইগ্রেন কষ্টকর হলেও, বিপজ্জনক নয়। কিছু নিয়ম মানলে এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব


প্রদীপ ভট্টাচার্য্যঃ মাইগ্রেনের নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন, এটি এক ধরনের মাথাব্যথা, যা মাথার কোনও একটা অংশে শুরু হয়ে সমস্ত মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে এটি প্রথমে কপাল থেকে শুরু হয়। এছাড়া ঘাড়ের পেছন অংশ থেকে ব্যথা শুরু হয়ে, মাথার পেছন দিকেও আসতে পারে। আবার অনেকের ডান বা বাম কানের গোড়া থেকেও ব্যথা শুরু হয়।

 

সাধারণ মাথাব্যথা ও মাইগ্রেনের মাথাব্যথার মধ্যে অনেক পার্থক্য থাকে। মাইগ্রেনের ব্যথা ৪ থেকে ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। পুরুষদের তুলনায় নারীদের মাইগ্রেনের সমস্যা বেশি হয়। মাইগ্রেনের ব্যথা খুব যন্ত্রণাদায়ক। একবার দেখা দিলে এটি বারবার হতে থাকে। তবে প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা কারণে মাইগ্রেনের সমস্যা হয়ে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য মিল দেখা যায়।


শিশুদেরও মাইগ্রেন হয়, তবে তাদের মাথা ব্যাথার বদলে বমি ও পেটব্যথা হয়। মা-বাবা উভয়েরই যদি মাইগ্রেনের সমস্যা থাকে তাহলে সন্তানের মাইগ্রেনের ঝুঁকি ৭৫ শতাংশ বেড়ে যায়।


চিকিৎসকদের মতে পিরিয়ডের সময়ও মহিলাদের মাইগ্রেন হতে পারে। কারণ এই সময় ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে যায়। দুই-তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রে মেনোপজের পর মাইগ্রেন কমে যায়, তবে কিছু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে এটি মেনোপজের পরও শুরু হতে পারে।


অনেকেরই মাইগ্রেনের ব্যথা বুঝতে সময় লেগে যায়। কারণ কোনটা সাধারণ ব্যথা আর কোনটা মাইগ্রেনের ব্যথা, এটা বুঝে ওঠা একটু কষ্টকর।


মাইগ্রেনের লক্ষণ গুলি হলঃ


মাথা বা ঘাড়ের কোন অংশ থেকে ব্যথা শুরু হয়ে তা ধীরে ধীরে সারা মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। বমি  বমি ভাব বা বমি হয়। উচ্চ শব্দ বা শোরগোল পছন্দ হয় না, শুনলে অস্থির লাগে। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। উজ্জ্বল আলো সহ্য হয়না, চোখ মেলে তাকাতে কষ্ট হয়। ইচ্ছে থাকলেও জোরে কথা বলতে পারে না। শরীর দূর্বল লাগে। প্রেসার কমে ও বেড়ে যেতে পারে। কোনও কিছু খেতে ভাল লাগেনা, রুচি কমে যায়।

কোনো কোনো সময় মাথাব্যথা এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যে, ব্যক্তি নিজের মাথার চুল টানতে বা ছিঁড়তে শুরু করেন। ব্যক্তিভেদে আরো বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারে।


মাইগ্রেন কেন হয়, এর সঠিক ব্যাখ্যা এখনো জানা যায়নি, তবে কিছু কিছু সাধারন কারণে মাইগ্রেন হয়ে থাকে, যেমন; পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব হলে,  অতিরিক্ত ঠান্ডা বা অতিরিক্ত গরম লাগলে, বাল্ব জ্বালিয়ে ঘুমালে, অতিরিক্ত নেশা করলে এ সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া একবার কারো এই রোগ হলে তার পরবর্তী প্রজন্মে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। খাবারের অনিয়ম বা বেশিক্ষণ ক্ষুধার্ত থাকলেও মাইগ্রেনের সমস্যা হয়। 


মেয়েদের ঋতুস্রাবের কারনে, গর্ভনিরোধক ওষুধ ব্যবহারে ও ছেলেদের ঘন ঘন স্বপ্নদোষ ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত সহবাসের ফলেও এ রোগ দেখা দিতে পারে।


এছাড়া ক্যালসিয়াম বা ভিটামিন ডি এর অভাবেও এ রোগ দেখা দেয়।


তবে সঠিক কোনো চিকিৎসা না থাকলেও কিছু নিয়ম মেনে চললে এ রোগ থেকে পরিত্রান পাওয়া যেতে পারে।


মাইগ্রেন এড়াতে রুটি বা ঢেঁকিছাঁটা চালের ভাত খান। বেশি করে জল পান করুন। হলুদ, সবুজ ও কমলা রঙের ফল ও শাকসবজি খান। নিয়মিত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন জাতীয় খাবার খান। অতিরিক্ত রোদ বা ঠান্ডায় থাকবেন না, এসি বর্জন করুন। সকাল সকাল ঘুমোন ও তাড়াতাড়ি উঠে পড়ুন। চকোলেট, আইসক্রিম, কোলড্রিংস ইত্যাদি পরিহার করুন। 


এই সকল নিয়ম মেনে চললে আশা করা যায় আপনি মাইগ্রেন থেকে মুক্ত থাকবেন। তবে এরপরও যদি কোন  সমস্যা হয়, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।

No comments: