Politics

[Politics][bleft]

West Bengal

[West Bengal][grids]

World

[World][bsummary]

National

[National][twocolumns]

জেনে নিন, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখার সঠিক উপায়


প্রদীপ ভট্টাচার্য্যঃ আপনার যদি কোলেস্টেরল থাকে তাহলে আজ থেকেই সাবধান হোন। অত্যধিক কোলেস্টেরলের মাধ্যমে আপনার হার্ট অ্যাটাক পর্যন্ত হতে পারে। কোলেস্টেরল হলো এক ধরনের চর্বি। এটি ৪ ধরনের হতে পারে। ট্রাইগ্লিসারাইড, এলডিএল, এইচডিএল, টোটাল কোলেস্টেরল। এর মধ্যে এইচডিএল হলো শরীরের জন্য উপকারী, আর বাকি তিনটি ক্ষতিকর। ক্ষতিকর এই কারণে যে, এটি জমা হয় রক্তনালিতে। জমা হতে হতে রক্তনালীর  স্বাভাবিক যে রক্তস্রোত তা বাধা পায়, ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাছাড়া এর দ্বারা মস্তিষ্ক আক্রান্ত হতে পারে, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হতে পারে এবং ব্লকেজ হতে পারে।


কোলেস্টরেল বাড়ার মূল কারণ হলো খাদ্যাভ্যাস ও খারাপ জীবনযাপন। এছাড়া বেশিক্ষণ শুয়ে থাকা, ধূমপান, মদ্যপানও এর জন্য দায়ী। কিছু রোগ যেমন, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ ইত্যাদির জন্যও  কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। এছাড়া কিছু কিছু ওষুধ আছে যারাও কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।


এখন কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে কি কি করনীয় জেনে নিন। 


প্রথমত স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।


খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন করতে হবে। বিশেষ করে লাল মাংস, খাসির মাংস, গরুর মাংস ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে। তবে গ্রিল করে খাওয়া যেতে পারে। এতে কিছুটা হলেও চর্বি কমে। রান্না করার সময় মাংসের টুকরো যতটা সম্ভব ছোট করতে হবে ও চর্বি ফেলে দিতে হবে। এছাড়া  শাক-সবজি, মাছ বেশি করে খেতে হবে।


আপনার তেলের ব্যাপারেও সাবধান হওয়া দরকার। অলিভ অয়েল খেতে পারলে খুবই ভালো হয়। এছাড়া ধানের কুঁড়ো থেকে যে তেল তৈরি হয় সেটাও খুব উপকারী। তবে সয়াবিন বা অন্য যেসব তেল আছে সেগুলো পরিমিত খেলে বেশি সমস্যা হওয়ার কথা নয়।


যেহেতু কাঁচা লবণ উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায় তাই কাঁচা লবণ এড়িয়ে চলতে হবে। আবার কোলেস্টেরলের সঙ্গে যেহেতু ডায়াবেটিসও  সম্পর্কযুক্ত, তাই ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ডায়াবেটিস বাড়লে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বেড়ে যায় ও উপকারী কোলেস্টেরল কমে যায়।


আপনাকে ধূমপান ও মদ্যপান এড়িয়ে চলতে হবে ও যথাসম্ভব দুশ্চিন্তামুক্ত জীবনযাপনের চেষ্টা করতে হবে।


শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম শুধু রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায় না, সঙ্গে সঙ্গে উপকারী কোলেস্টেরলের পরিমাণও বাড়িয়ে দেয়। তাই রাতের খাবারের পর জোরে জোরে কমপক্ষে ৪৫ মিনিট হাঁটলে আপনি অনেক উপকার পাবেন। 


পর্যাপ্ত জলপান অর্থাৎ দিনে ৫ থেকে ৬ গ্লাস জল পান করলে শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদানের পাশাপাশি ক্ষতিকর কোলেস্টেরলও বেরিয়ে যায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কমিয়ে দেয়।


প্রতিদিন এক মুঠো বাদাম খাওয়া আপনার ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এছাড়া ওটস, সিরিয়াল, যব, আঙ্গুর, বেদানা লেবু ইত্যাদিও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।


আপনি দিনে অন্তত দুবার চিনি ছাড়া গ্রিন টি পান করুন, এটি শরীরের উপকারী কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। 


আপনি রোজ সকালে বা রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক কোয়া কাঁচা রসুন খান। এটি ক্ষতিকর এলডিএল হ্রাস করতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।


এছাড়া আপনি হলুদ মেশানো দুধও পান করতে পারেন বা গরম জলে হলুদ মিশিয়েও পান করতে পারেন। হলুদের ভেতরে থাকা উপাদান রক্তের ধমনী থেকে খারাপ কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে।


আপনি কোলেস্টেরলের জন্য যদি কোনও ওষুধ খান, তবে তা কখনোই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিজে থেকে বন্ধ করবেন না। 


আমাদের শরীরে এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা ১০০ এর নিচে থাকলে ভালো, অন্যদিকে এইচডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা পুরুষদের ক্ষেত্রে ৫০ এর বেশি এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৬০ এর বেশি থাকা খুবই দরকার। আর তাই বছরে অন্তত ২ বার কোলেস্টেরল পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া খুবই জরুরী। 


আশাকরি এই নিয়মগুলো মেনে চললে আপনি আপনার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবেন ও সুস্থ থাকবেন।

No comments: