Politics

[Politics][bleft]

West Bengal

[West Bengal][grids]

World

[World][bsummary]

National

[National][twocolumns]

সুস্থ থাকতে ও সুস্থ রাখতে অবশ্যই মাস্ক পরুন



প্রদীপ ভট্টাচার্য্যঃ কোভিড ১৯ শুরু হওয়ার তিন বছর বাদে এখন নিশ্চয়ই মাস্ক শব্দটির সাথে আপনি আর অপরিচিত নন। ছোট থেকে বড় সকলকেই এটি পরবার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


নিজেদের এবং অন্য সবাইকে সুরক্ষিত রাখতে মাস্ক পড়ার পাশাপাশি শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, ঘন ঘন হাত ধোয়া ও স্যানিটাইজার ব্যাবহার করা জরুরি বলে মনে করা হয়েছে।


আপনার এবং আপনার আশেপাশে থাকা অন্য সবার সুরক্ষার জন্য মাস্ক সঠিকভাবে পরিধান করা, খোলা এবং রক্ষণাবেক্ষণ করাও গুরুত্বপূর্ণ।


মুখে মাক্স পরার কারণ, কোভিড ১৯ ছড়িয়ে পরার প্রধান উপায় হলো, শ্বাসনালী থেকে বেরিয়ে আসা ক্ষুদ্র জলকণা বা ড্রপলেট, যা মানুষের কথা বলা, গান গাওয়া, কাশি ও হাঁচির সময় বেরিয়ে আসে। এগুলো যাতে পাশে থাকা কোন মানুষের  সংস্পর্শে না আসে ও কোন জায়গায় না পড়ে তার জন্যই মুখে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।


আপনি মেডিকেল মাস্ক ও নন-মেডিকেল অর্থাৎ কাপড়ের মাস্ক, এই দুই ধরনের মাস্কই ব্যবহার করতে পারেন। তবে আপনার যদি কোভিড ১৯ এর উপসর্গ থেকে থাকে তবে অন্যদের সুরক্ষার জন্য মেডিকেল মাস্কই পরা উচিত। অন্যদিকে যদি কোনো উপসর্গ না থাকে তাহলে আপনি কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। তবে আপনি যে ধরনের মাস্কই বেছে নেন না কেন, এটা এমন হতে হবে যাতে নাক,মুখ ও চিবুক ঢেকে রাখা যায় এবং দুই কানে বন্ধনী দ্বারা সুরক্ষিত থাকে।


তবে নবজাতক বা পাঁচ বছরের কম বয়সের শিশুদের,  শ্বাসকষ্ট রয়েছে এমন কোনো মানুষ ও যারা অন্যের সাহায্য ছাড়া মাস্ক পরতে বা খুলতে অক্ষম তাদের কারোরই মাস্ক পরা উচিত নয়। এছাড়া শিশু ও বয়স্কদের খেলাধুলা ও শারীরিক  কার্যকলাপের সময়ও মাস্ক না পরাই উচিড, যাতে এটি তাদের শ্বাস-প্রশ্বাসে কোনো ধরনের সমস্যা তৈরি করতে না পারে।


মাস্ক ব্যবহারের পর সেটি পরিষ্কার করাও জরুরি। আপনি গরম জলে সাবান গুঁড়ো মিশিয়ে কাপড়ের মাস্ক পরিষ্কার করতে পারেন। পরিষ্কারের পর এটি ভালো করে শুকিয়ে তারপর ব্যবহার করা উচিত। আর মেডিকেল মাস্ক যেহেতু একবার ব্যবহার উপযোগী, তাই এটি ব্যবহারের পর ঢাকনাযুক্ত ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দেবার পরামর্শ দেওয়া হয়।


তবে আমাদের সবার এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, শুধুমাত্র মাস্ক পরলেই তা আমাদের নিরাপদ করবে না, এর সঙ্গে আমাদের ঘনঘন হাত ধুতে হবে, স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে ও বাড়ির বাইরের লোকেদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।


এসব সত্ত্বেও একটা প্রশ্ন থেকেই যায় তা হল, সরকারি নিষেধাজ্ঞা, মাইকিং, নিকটজন বা অন্যান্যদের মৃত্যু ইত্যাদি সত্বেও মানুষের মুখে ২ থেকে ৫, খুব জোর ১০ টাকা দামের একটা মাস্ক পরতে এত অনীহা কেন ? এটা কি দু-তিনবার ভ্যাকসিন নেওয়া হয়েছে, আর কিছু হবে না এই ভাবনায়, নাকি শ্বাসকষ্ট হয় এই কারণে, নাকি লোককে মুখ দেখাতে পারছি না এই কষ্টে ? না, কারণ এগুলোর কোনটাই নয়।


কারণ হল আপনি মুখে মাস্ক পরেন আপনার হাঁচি-কাশি আটকে অন্যকে বাঁচাবার জন্য। এখন আপনি যদি দেখেন, আপনি মাস্ক পরা অবস্থায় আপনার পাশ দিয়ে মাস্ক না পরে অনেকেই হেঁচে, কেশে চলে যাচ্ছেন এবং আপনি সুরক্ষিত থাকছেন না অথচ তারা মাস্ক না পরে আপনার দ্বারা সুরক্ষিত থাকছেন, তখন আপনার কি মনে হবে না যে, মাস্ক পরে  অসুরক্ষিত থাকার চেয়ে মাস্ক না পরে অসুরক্ষিত থাকাই ভালো। আর শুধু এই কারণেই আমাদের মধ্যে মাস্ক না পরার এত অনীহা। আসলে আমরা সবাই নিজেকে ভালবাসি আর কাউকে নয়, তাই যখন দেখি অন্যের দ্বারা আমি সুরক্ষিত নই, তখন আমার মনে হয় অন্যরাই বা কেন আমার দ্বারা সুরক্ষিত থাকবে।


আর তাই যতদিন না মানুষের মনে, আমরা সবাই একসঙ্গে সবাইকে নিয়ে ভালো থাকবো- এই ভাবনা জেগে উঠবে ততদিন কোনো আইন, কোনো নির্দেশ মানুষকে মাস্ক পরতে বাধ্য করতে পারবে না।


তাই, মনোভাব বদলান। সুস্থ থাকতে নিজে মাস্ক পরুন ও অন্যকে মাস্ক পরতে অনুরোধ করুন। তাহলেই আপনি, আপনার আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব সকলকে নিয়েই ভালো  থাকবেন।

No comments: