Politics

[Politics][bleft]

West Bengal

[West Bengal][grids]

World

[World][bsummary]

National

[National][twocolumns]

নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অবহেলা নয়



প্রদীপ ভট্টাচার্য্য : সুস্থ ও কল্যাণমুখী সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক কারিগর হলেন সেই সমাজের নারীরা। তাই বর্তমান ও আগামীর প্রয়োজনেই নারীদের সুস্থ রাখার ব্যবস্থা করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মা, বোন, স্ত্রী, কন্যা, প্রেমিকা - যে নামেই ডাকা হোক না কেন - নারীর সঙ্গে মায়া, মমতা ও ভালোবাসার রয়েছে অবিচ্ছেদ্য যোগসূত্র।


পরিবার কিংবা কাছের মানুষটিকে নিজের সর্বস্ব দিয়ে ভালো রাখার চেষ্টার ত্রুটি থাকেনা তাদের। কিন্তু নিজের যত্নের ব্যাপারে অবহেলার পাশাপাশি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় তাদেরকেই ভুগতে দেখা যায় বিভিন্ন সময়। 


আমাদের মনে রাখতে হবে যে, নারীর জন্মের শুরু থেকেই তার ভেতরে লুকিয়ে থাকে ভবিষ্যৎ মাতৃসত্ত্বা। তার প্রতিদিনের বেড়ে ওঠার মাঝেই সেই সত্ত্বা ধীরে ধীরে পূর্ণতার দিকে এগিয়ে যায়।


আর এসব কারণেই নারীর শারীরিক,  মানসিক, সামাজিক সবদিক থেকে ভালো থাকা ও ভালো রাখার দায়িত্ব আমার আপনার সকলের।


একথা ঠিকই যে, সংসারের ভালো-মন্দ খেয়াল রাখতে গিয়ে নিজের প্রতি আর যত্নবান হয়ে ওঠা হয়না নারীদের। সারাক্ষণ তারা ব্যস্ত সময় কাটান পরিবারের সকলের সেবা করার জন্য ও তাদের ভালো রাখার জন্য। তাই এসব করতে গিয়ে তাদের নিজের যে শরীর বলে কিছু একটা বস্তু আছে এবং সেটা যে এক আধ দিন খারাপ হতে পারে একথা তারা চিন্তাও করতে পারেন না সংসারকে ভালো রাখার জন্য। 


তবে একথা মনে রাখতে হবে যে, সংসারকে ভালো রাখতে গিয়ে যদি নারীরা নিজেকে অসুস্থ করে তোলেন সেক্ষেত্রে তার সাথে সংসারের অন্য সদস্যরাও বিপদের মুখে পড়বেন। আর তাই তাদেরও কতকগুলো নিয়ম মানতে হবে, যাতে তারা নিজেরা সুস্থ থাকেন ও সঙ্গে সঙ্গে সংসারের অন্য সদস্যরাও ভালো থাকেন। 


তাই প্রথমে সংসারের অন্য সদস্যদের মতো আপনিও সময়মতো ও নিয়মকরে জলখাবার, দুপুর ও রাতের খাবার খান। 


পরিবারের কেউ কোনো কাজে বাড়ির বাইরে গেলে, তার জন্য অপেক্ষা না করে, আপনি আপনার খাবার সময়মতো খেয়ে নেবেন। কারণ অসময়ে খেলে গ্যাস, অম্বল ও হজমের সমস্যা হতে পারে। 


খাবারে কম চর্বিযুক্ত, দুগ্ধজাত খাবার, শাক-সবজি, ডিম, মাছ, ফল রাখুন। তবে বেশি তেল, ঝাল, মশলা যুক্ত খাবার, চিনি, ক্যালোরি, ফ্যাটযুক্ত খাবার ও পানীয় থেকে দূরে থাকুন। 


সংসারের বাড়তি রেখে দেওয়া বাসি খাবার পরের দিন কখনোই খাবেন না, কারণ বাসি খাবার সুস্থ শরীরকে আরও অসুস্থ করে তোলে।


সারাদিনের পরিশ্রমের পর গৃহিণীদের দরকার পর্যাপ্ত ঘুম। তাই প্রতিদিন রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। তা না হলে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে সংসারের জন্য দৌড়তে পারবেন না।


কখনোই দুপুরে ঘুমোবেন না। এর ফলে যেমন ওজন বাড়তে পারে তেমনি রাতে ঘুম আসতেও দেরি হতে পারে। 


নিজের জন্য প্রতিদিন অবশ্যই কিছু সময় বরাদ্দ রাখুন। যে সময়ে আপনি চিন্তামুক্ত হয়ে নিজের মনের মতো কিছু করবেন। নিজের সঙ্গে কথা বলবেন, নিজেকে আনন্দে রাখবেন। যাতে আপনার জীবন আরও সাবলীল ও ইতিবাচকভাবে এগিয়ে যেতে পারে।


আপনার যদি অতিরিক্ত চিন্তা থাকে তাহলে ধ্যান বা মেডিটেশন করার মাধ্যমে আপনি চিন্তামুক্ত হতে পারেন।


গৃহিণীদের সুস্বাস্থ্য সুনিশ্চিত করতে ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি ব্যায়ামের জন্য খুব সহজ কিছু কৌশল যেমন, সিঁড়ি বেয়ে ওঠা, হাঁটা, সঠিক কৌশলে বসে কাজ করা ইত্যাদির মাধ্যমে আপনার শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে পারেন। এছাড়া আপনি যোগ ব্যায়াম ও প্রাণায়ামও করতে পারেন।


আপনার যদি শারীরিক কিছু সমস্যা থাকে তাহলে কখনোই তা সংসারের কথা ভেবে চেপে রাখবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তার কথা মেনে চলবেন। আপনার যদি নিয়মিত পরীক্ষা করার কিছু থাকে, তাহলে তা অবশ্যই করিয়ে যাবেন। 


আশাকরি এই নিয়মগুলো অনুসরণ করলে প্রত্যেক গৃহিণীই সুস্থ শরীরে ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তার পরিবারকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবেন।

No comments: