বিষণ্নতার সাধারণ লক্ষণ সম্পর্কে জানুন ও আপনার প্রিয়জনদের সাহায্য করুন

একজন ব্যক্তির মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতার লক্ষণগুলি সনাক্ত করা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, কারণ কারো হৃদয়ের অশান্তি বোঝা কঠিন। আপনার বন্ধু তাদের নকল হাসির পিছনে আসল ব্যথা লুকিয়ে থাকতে পারে। অনেকেই বিষণ্ণতায় ভোগেন যা তাদের মনে আত্মহত্যার চিন্তাভাবনা তৈরি করতে পারে।

একজন হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তি আত্মহত্যার প্রবণতার লক্ষণ দেখাতে পারে যখন সে প্রায়ই আত্মহত্যা এবং মৃত্যুর কথা বলতে শুরু করে। হতাশা এবং আত্মহত্যার চিন্তায় ভুগছেন এমন লোকেরা প্রায়শই ক্ষুধা হারাতে থাকে, যা ব্যাপক ওজন হ্রাস এবং ডিহাইড্রেশন হতে পারে। বিষণ্ণতায় আক্রান্ত ব্যক্তির আত্মহত্যার মাধ্যমে তার জীবন হারানোর সম্ভাবনা ২০ গুণ বেশি।

বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস প্রতি বছর ১০ সেপ্টেম্বর আত্মহত্যার প্রবণতা, আত্মহত্যা এবং কীভাবে তাদের মোকাবেলা এবং প্রতিরোধ করা যায় সে সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য পালন করা হয়। আত্মহত্যা প্রতিরোধ করা যেতে পারে যদি প্রাথমিক পর্যায়ে বিষণ্নতা সনাক্ত করা যায় এবং প্রয়োজনীয় কাউন্সেলিং এবং প্রয়োজনীয় ব্যক্তিকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। বিষণ্ণতা মানসিক অসুস্থতার একটি খুব সাধারণ রূপ, যা সমস্ত বয়সের মানুষের মধ্যে ঘটে এবং মনস্তাত্ত্বিক, পরিবেশগত, সামাজিক এবং জেনেটিক কারণগুলির দ্বারা উদ্ভূত হয়।

বিষণ্নতার কারণ ও লক্ষণ:

জেনেটিক্স হতাশার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি পরিবারের অনেক সদস্যের মধ্যে লক্ষণগুলি স্পষ্ট হতে পারে। ভিটামিন বি১২ এবং ভিটামিন ডি এর অভাবও বিষণ্নতার সাথে যুক্ত। ডায়াবেটিস, হাইপোথাইরয়েডিজম, পারকিনসন্স বা এইচআইভির মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগগুলি হতাশার কারণ হিসাবে পরিচিত।

বিষণ্ণ বোধ করা, খিটখিটে হওয়া, কাজের প্রতি আগ্রহ ও একাগ্রতা তৈরি করতে না পারা, কারণ ছাড়াই ক্লান্ত বোধ করা, হাইপারসোমনিয়া, অনিদ্রা, ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া, ওজনের পরিবর্তন, যৌন ইচ্ছার অভাব, হতাশা, অসহায়ত্ব, আত্মহত্যা বা নিজের ক্ষতি করার চিন্তাভাবনা সবই লক্ষণ।

হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিকে কীভাবে সাহায্য করবেন:

* কথোপকথন করা: হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিদের থেকে নিজেকে দূরে রাখার পরিবর্তে, আপনার আত্মহত্যার প্রবণতার লক্ষণগুলি বোঝার জন্য তাদের সাথে কথা বলা উচিত। তাদের লক্ষণগুলি সম্পর্কে তাদের সাথে সরাসরি কথা বলার পরিবর্তে, তাদের সাথে সংবেদনশীল এবং বিচারহীনভাবে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ।

* একজন ভালো শ্রোতা হোন: একজন হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তির সাথে আচরণ করার সময়, একজন ভালো শ্রোতা হওয়াও গুরুত্বপূর্ণ। তাদের কথা মনোযোগ সহকারে শোনা খুবই আশ্বস্ত হতে পারে।  

সাধারণ বিশ্বাসের বিপরীতে, আত্মহত্যার বিষয়ে কথা বলা ঝুঁকি বাড়ায় না এবং মানসিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা সত্যিই উপকারী হতে পারে।