Politics

[Politics][bleft]

West Bengal

[West Bengal][grids]

World

[World][bsummary]

National

[National][twocolumns]

জেনে নিন, ইলিশ মাছের স্বাস্থ্য উপকারিতা


প্রদীপ ভট্টাচার্য্যঃ  ইলিশ মাছের নাম শুনলে জিভে জল আসে না এমন বাঙালি নেই বললেই চলে। বাঙালীর রান্নাঘরে ইলিশের পদের তো শেষ নেই, ভাজা ইলিশ, সরষে ইলিশ, ভাপা ইলিশ, দই ইলিশ, ইলিশ পাতুরি, ইলিশের টক, ইলিশের ভর্তা, ইলিশ শুক্তো আরো কত কি! বাঙালির ইলিশ প্রেম যতটা খাঁটি,  ইলিশের বাঙালিপ্রেমও কিন্তু ঠিক ততটাই।  আমরা প্রধানত খাই গঙ্গা ও পদ্মার ইলিশ। তবে স্বাদে ও গন্ধের জন্য বাঙালীদের বেশী পছন্দ  পদ্মার ইলিশ।


তবে অনেকেই জানেন না যে, স্বাদে গন্ধে অনন্য ইলিশ কিন্তু পুষ্টিগুণেও ভরপুর।


ইলিশে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ছাড়াও রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, নিয়াসিন, ট্রিপটোফ্যান, ভিটামিন এ,বি,ডি, বি ১২ সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম সহ অন্যান্য ভিটামিন, মিনারেল, ফসফরাস ইত্যাদি।


জেনে নিই, ইলিশের কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা।


১) ইলিশ মাছে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ খুবই কম। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকায় রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকে। ফলে হৃদপিণ্ড সুস্থ থাকে।


২)  ইলিশের তেল শরীরে ইকসিনয়েড  হরমোন তৈরিতে বাধা দেয়। এই হরমোনের প্রভাবে রক্ত জমাট বেঁধে শিরা ফুলে যায়। তাই এই মাছ খেলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়, ফলে থ্রম্বোসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।


৩) ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকায়, ডায়েটে ইলিশ মাছ থাকলে বাতের ব্যথা ও গাঁট ফুলে গিয়ে যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।


৪)  ইলিশ যেহেতু তেলযুক্ত মাছ, তাই এই মাছ খেলে চোখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। বয়স কালে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসা মোকাবিলা করতেও ইলিশ উপকারী। এছাড়া ইলিশে থাকা ভিটামিন-এ রাতকানা রোগ দূর করতেও সাহায্য করে।


৫) আপনার থাইরয়েড থাকলে ইলিশ খান, কারণ এই ইলিশে থাকা আয়োডিন আপনার থাইরয়েড গ্ল্যান্ডকে সুস্থ রাখে। এছাড়া এটি সেলেনিয়াম উৎসেচক ক্ষরণে সাহায্য করে, যা ক্যানসার মোকাবিলা করতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।


৬)  ইলিশ মাছ ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কার্যকর। শিশুদের হাঁপানি রোগ প্রতিরোধ করে ইলিশ মাছ, আর তাই যারা নিয়মিত মাছ খান তাদের ফুসফুস অনেক বেশি শক্তিশালী হয়।


৭) আপনি যদি অবসাদে আক্রান্ত হন, তাহলে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত ইলিশ তার মোকাবিলা করতে পারে। এছাড়া সিজনাল এফেক্টিভ ডিসঅর্ডার ও ও পোস্ট ন্যাটাল  ডিপ্রেশন কাটাতেও ইলিশ উপকারী।


৮)  ইলিশ খেয়ে আপনি আপনার ত্বককে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করতে পারেন। নিয়মিত মাছ খেলে একজিমা, সিরোসিসের হাত থেকে রক্ষা পায় ত্বক। ইলিশ মাছে থাকা প্রোটিন কোলাজেনের অন্যতম উপাদান, আর এই কোলাজেন আপনার ত্বক টাইট ও নমনীয় রাখতে সাহায্য করে।


৯)  তেল যুক্ত ইলিশ মাছ আপনার পেটের সমস্যা দূর করে। এছাড়া ইলিশে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড আলসার, কোলাইটিসের হাত থেকেও আপনাকে রক্ষা করে। 


১০) ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত মাছ খেলে বয়স বাড়ার পর ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা অনেক কম থাকে। এছাড়া এটি শিশুদের মস্তিষ্কের গঠনে সাহায্য করে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায় ও পড়াশোনায় মনোযোগী করে তোলে।


১১)  ইলিশে থাকা ভিটামিন ডি আপনার চুলকে সুস্থ-সতেজ ও উজ্জ্বল রাখে।


১২) ইলিশ মাছে বিদ্যমান ফসফরাস দাঁত শক্ত ও মজবুত করতে বেশ কার্যকর। 


এসব সত্ত্বেও ইলিশ মাছের কিছু অপকারিতাও রয়েছে, 


১) যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তাদের এই মাছ না খাওয়াই ভালো, তা না হলে অ্যলার্জি বেড়ে গিয়ে অনেক বড় সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। 


২) যেহেতু এই মাছে প্রচুর ছোটো ছোটো কাঁটা রয়েছে, তাই বাচ্ছাদের এই মাছ খাওয়ার সময় বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত, অন্যথায় গলায় কাঁটা আটকে অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করতে হতে পারে। 


৩) অতিরিক্ত ইলিশ মাছ খেলে পেট ফাঁপা ও গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। তাই যাদের এইসব রোগ আছে তাদের কখনোই এই মাছ খাওয়া উচিত নয়।


তাই অবশ্যই ইলিশ মাছ খান, তবে শরীর বুঝে। ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।

No comments: