জেনে নিন জ্বরের প্রকার ভেদ বিবিধ
জ্বর একটি শারীরিক সমস্যা। যখন আপনার শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক সীমার উপরে থাকে তখন তাকে জ্বর বলা হয়। সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বা ভেতর থেকে কোনও সমস্যা সংকেত দিতে শরীর আপনার তাপমাত্রা বাড়ায়।
শরীরের তাপমাত্রা ৯৮ থেকে ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের স্বাভাবিক সীমার উপরে উঠলে জ্বর হয়। আপনার তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে ঠান্ডা লাগা হতে পারে।
এই সময়ে, আপনার ইমিউন সিস্টেম জ্বর তৈরি করে রোগের কারণ দূর করার চেষ্টা করছে। জ্বরের কারণ যেমন ভিন্ন, তেমনি জ্বরের সময়সীমাও আলাদা।
জ্বরকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। জ্বরের ধরন জানতে, আমরা ডাঃ রমন কুমার, প্রেসিডেন্ট, ফ্যামিলি ফিজিশিয়ানস অফ ইন্ডিয়া, গ্রেটার নয়ডা, প্রেসিডেন্ট, ফ্যামিলি ফিজিশিয়ানস অফ ইন্ডিয়া, গ্রেটার নয়ডা উনি কী বলছেন জেনে নেওয়া যাক
হঠাৎ উচ্চ জ্বর:
এই জ্বরের নাম থেকেই বোঝা যায় যে, এতে হঠাৎ করেই প্রচণ্ড জ্বর আসে। এই অবস্থায় ব্যক্তির শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যায়। ক্লান্তি, শরীর ব্যথা ও মাথাব্যথার কারণেও এই জ্বর হতে পারে। ডেঙ্গু জ্বর হলে হঠাৎ উচ্চ জ্বর আসে।
বাতজ্বর:
বাতজ্বর বা জ্বর হয় স্ট্রেপ্টোকক্কাল ব্যাকটেরিয়া দ্বারা। এই ব্যাকটেরিয়া গলায় প্রচণ্ড ব্যথাও করতে পারে। টনসিল, মাথাব্যথা এবং ফুলে যাওয়া বাতজ্বরের সাধারণ লক্ষণ।
জ্বরের প্রকারভেদ:
জ্বরে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে জ্বরে তাপমাত্রা দ্রুত কমে যায়, আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে সময় বেশি লাগে।
এছাড়াও, জ্বর বিভিন্ন উপায়ে বিভিন্ন মানুষকে প্রভাবিত করে। এমতাবস্থায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জ্বরের প্রধান পাঁচ প্রকারের শ্রেণিবদ্ধ করেছেন। জ্বরের প্রকারভেদ জেনে নিন
বিরতিহীন জ্বর:
বিরতিহীন জ্বরে, শরীরের তাপমাত্রা সারা দিন জ্বর থাকে, তবে রাতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে এই জ্বর হয়। ম্যালেরিয়ায় এ ধরনের জ্বর আসে। বিরতিহীন জ্বরকে কটিডিয়ান জ্বর, তৃতীয় জ্বর এবং চতুর্মুখী জ্বরে ভাগ করা হয়।
রেমিটেন্ট জ্বর:
রেমিটেন্ট জ্বরে, দিনের বেলা শরীরের তাপমাত্রা খুব বেশি থাকে। এই অবস্থায় শরীরের তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ওঠানামা করে। রেমিট্যান্ট জ্বর ব্রুসেলোসিসের মতো ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণেও হয়। একে চিকিৎসা পরিভাষায় ইনফেকটিভ এন্ডোকার্ডাইটিস বলে। এটি হৃৎপিণ্ডের অভ্যন্তরীণ টিস্যুতে প্রদাহ সৃষ্টি করে।
একটানা জ্বর:
একে ক্রমাগত জ্বরও বলা হয়। এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী জ্বর। দিনের বেলা তাপমাত্রার সামান্য বা কোন পরিবর্তন নেই। এই জ্বর নিউমোনিয়া, মূত্রনালীর সংক্রমণ এবং থাইরয়েডের কারণেও হতে পারে।
জ্বরের লক্ষণ:
জ্বর কোনো রোগ নয়, বরং আপনার শরীরে কোনো রোগ বা সংক্রমণের লক্ষণ। তবে জ্বর সাধারণত অন্যান্য উপসর্গের সাথে থাকে। জ্বরের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে-
ঘাম হওয়া বা ঠান্ডা লাগা
মাথাব্যথা হচ্ছে
পেশী ব্যথা
ধারালো, অবিরাম ব্যথা
ক্ষিদে না পাওয়া
অস্থিরতা
দুর্বল এবং ক্লান্ত বোধ
পেশী শক্তি হ্রাস
মেজাজের পরিবর্তন, বিরক্তিভাব
বাড়িতে জ্বর প্রতিরোধ:
জ্বর এড়াতে ঠাণ্ডা ও খুব গরম জলে স্নান করা থেকে বিরত থাকুন। আপনি হালকা গরম জল দিয়ে স্নান করুন। এটি আপনাকে স্বস্তি দেবে।
জ্বরে দুর্বলতা অনুভূত হয়। এই ক্ষেত্রে আপনি জলশূন্য হয়ে পড়েন। এটি এড়াতে প্রচুর জল পান করুন। প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস জল পান করুন।
জ্বর হলে শুধু ঘরে রান্না করা খাবার খান। তরল খাদ্য গ্রহণ করুন। বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন।
ঠান্ডা খাবার ও ঠান্ডা জল এড়িয়ে চলুন।
আপনারও যদি জ্বর হয়, তাহলে আপনি সহজেই আপনার জ্বরের ধরন জানতে পারবেন। জ্বরের কোনও লক্ষণ দেখলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
No comments: