জেনে নিন বিভিন্ন রোগের প্রাথমিক চিকিৎসায় উপকারী ফল এর সম্পর্কে
আপেল -
এটি একটি পুষ্টিকর ফল। এটি শক্তি বৃদ্ধিকারীও বটে। আপেল ভিটামিন 'এ' এবং 'সি' সহ খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ। এটি খেলে অ্যাসিডের পরিমাণও বেড়ে যায়। হৃদস্পন্দন এবং দুর্বলতা ঠিক হয়। শুকনো কাশিতেও এটি উপকারী। আপেল একটি মূত্রবর্ধক, এছাড়াও কিডনির সমস্যায় উপশম দেয়। এটি দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথায় উপকারী।
এটি কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়া উভয় ক্ষেত্রেই উপকারী। আপেল পেটের কৃমি দ্রুত দূর করে। কিডনির পাথরে উপকারী। এমনকি দাঁতের রোগেও আপেল একটি প্রাকৃতিক রক্ষাকারী। আপেল পটাসিয়াম এবং ফসফরাস সমৃদ্ধ। এটি হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। এটি তাপ এবং শুষ্কতা দূর করে।
জাম -
জামের বীজ ওষুধের দৃষ্টিকোণ থেকে খুবই উপকারী। জাম ডায়রিয়ার জন্যও ব্যবহৃত হয়। জন্ডিসে জাম খাওয়া উপকারী। এটি খেলে পিপাসার অভিযোগ দূর হয়। মুখে বের হওয়া ফুসকুড়ি, ব্রণ ইত্যাদি জাম খেলে দূর করা যায়। নিয়মিত জাম খেলে দাঁত ও মাড়ির রোগে উপকার পাওয়া যায়। জামের ভিনিগারও খুব উপকারী।
কমলা -
কমলাও একটি উপকারী ফল। কমলালেবুতে ভিটামিন ‘সি’ বিশেষ পরিমাণে পাওয়া যায় বলে এর ব্যবহারে সাধারণত সংক্রামক রোগ দেখা যায় না।
এটি খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। হৃদরোগ, চুলের অসুখ, পেটের দোষ দূর করতে কমলা বিশেষ উপকারী। এটি বক্ষের ব্যাধি যেমন ক্ষয় ইত্যাদিতেও উপকারী। খাবারের পর কমলা খেলে উপকার পাওয়া যায়। কমলার রসে কালো লবণ ও শুকনো আদার গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে বদহজমের সমস্যা দূর হয়। এটি ডায়রিয়া, বমি ও বদহজমের মতো রোগ নিরাময় করে। কমলার রসের সঙ্গে গোলমরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে চোখের দৃশ্যমান দোষ দূর হয়।
পেঁপে -
পেঁপে অ্যানোরেক্সিয়া দূর করে। ক্ষিদে বাড়াতে সাহায্য করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং বাত ও কফ প্রধান ব্যক্তিদের জন্য উপকারী। এটি গুরুভোজন হজমে সাহায্য করে। পাচনতন্ত্রের জন্য পেঁপে খুবই উপকারী। এটি লিভার এবং কিডনির কার্যকারিতা বাড়ায়। প্রস্রাবের বাহক দেহের সাতটি ধাতুকে রক্ষা করে।
ডালিম -
এই ফল শরীরের জ্বালাপোড়া, জ্বর, তৃষ্ণা, হৃদরোগ, গলার অসুখ ও মুখের ফোলা রোগে উপকারী। এটি একটি শক্তি বৃদ্ধিকারী ফল । টক ডালিম পিত্ত, বাত ও কফের কারক। এর ফলের ছাল অ্যানথেলমিন্টিক, হেমাটুরিয়া এবং কাশিতে উপকারী। ডালিমের শুকনো খোসা চুষলে শুকনো কাশিতে দারুণ উপশম হয়। মিষ্টি ডালিম রক্ত বর্ধক, যকৃতকে শান্তি প্রদান করে, পাকস্থলীকে নরম করে এবং যৌন অঙ্গকে শক্তিশালী করে। এর পাকা ফল পুষ্টিকর এবং ত্রিদোষ নাশক।
পেয়ারা -
খাবার আগে নিয়মিত একটি পেয়ারা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না। ঠান্ডায় শুধু পেয়ারা দুই থেকে তিন দিন খেলে উপকার পাওয়া যায়। গাঁজা সেবনে নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিকে পেয়ারা খাওয়ালে নেশা কমে যায়। কাঁচা পেয়ারায় ভিটামিন ‘সি’ বেশি থাকে। ভিটামিন ‘সি’ দাঁত ও মাড়ির রোগ, জয়েন্টের ব্যথা, স্কার্ভি, রক্তপাত ইত্যাদি রোগে খুবই উপকারী। ম্যালেরিয়া, পাইলস, পাগলামি,শরীর ও হাত-পা জ্বালাপোড়া, কৃমি ইত্যাদি রোগে পেয়ারা উপকারী। বায়ুর অভিযোগে সৈন্ধব লবণের সঙ্গে নিয়মিত পেয়ারা খেলে উপকার পাওয়া যায়। খাবারের আগে পেয়ারা খাওয়া ডায়রিয়ায় উপকারী। খাবারের পর পেয়ারা খেলে হজমশক্তি ভালো হয়। পেয়ারার খোসায় ভিটামিন ‘সি’ও প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। তাই খোসা সহ পেয়ারার ব্যবহার উপকারী। এটি শিশুদের জন্য খুবই পুষ্টিকর এবং একটি সুষম খাদ্য। পেয়ারা স্নায়ুতন্ত্র, পরিপাকতন্ত্র, হৃদয় ও মনকে শক্তিশালী করে। তবে পেয়ারা সন্ধ্যা এবং রাতে খাওয়া উচিৎ নয়।
No comments: