গৃহস্থালীর কাজ আপনার সন্তানদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়
শিশুদের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, গৃহস্থালির কাজে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা শিশুদের আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুরা গৃহস্থালির কাজ উপভোগ করে, যদি এটি একটি আকর্ষণীয় উপায়ে করা হয় এবং কাজটি বোঝা না হয়।
* অধ্যয়নগুলি দেখায় যে কাউকে সাহায্য করা একজন ব্যক্তির আত্মসম্মানবোধ বৃদ্ধি করে। প্রশংসা পেলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে, আবার কাজ করার ইচ্ছা জাগে এবং ধীরে ধীরে কাজের প্রতি দায়িত্ববোধ উপলব্ধি হতে থাকে। তারপর তারা নিজেদের এবং তাদের প্রিয়জনের প্রতি দায়িত্বশীল হয়ে উঠতে থাকে।
* যৌথ পরিবারে থাকার কারণে বা চাকর-বাকরদের সুবিধার কারণে যদি আপনার সন্তানদের এ ধরনের কাজ করার প্রয়োজন না হয়ে থাকে, তাহলে শুরুতে তারা এ ধরনের কাজ করতে ভালো ও প্রয়োজনীয় বোধ করবে না এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু যদি তারা এমন কাজ করে। আগ্রহীদের যদি কাজের গুরুত্ব বুঝিয়ে পদ্ধতিতে করা হয় তবে তা তাদের উন্নয়নের জন্যই উপকারী হবে।
একাডেমিক, সামাজিক এবং ব্যবহারিক দক্ষতা বৃদ্ধি করে
* শিশুরা কাজের পাশাপাশি ব্যবহারিক ও সামাজিক দক্ষতা শেখে।
* ঘরে এবং বাইরের পার্থক্য বুঝতে শুরু করে।
* তার শৈশব সহজেই বয়ঃসন্ধির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়।
* বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে গৃহস্থালীর কাজ এমন একটি বিশ্বমানের কাজ, যা কোনও ধরণের স্কুল বা প্রতিষ্ঠানে শেখানো যায় না।
স্ট্রেস লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখে
* শিশুরা পড়াশোনা ও ক্লাসের ভারে মানসিকভাবে পুরোপুরি ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
* কখনো কখনো এই মানসিক চাপ এতটাই বেড়ে যায় যে তারা হতাশ ও বিষণ্ণ হতে শুরু করে।
*এমন অবস্থায় ঘরের কাজ, যেমন বিছানা তৈরি করা, পছন্দের খাবার তৈরিতে সাহায্য করা, ধুলাবালি, পরিষ্কার করা ইত্যাদি মনকে আরাম দেয়।
* শিশুরা আবার উত্তেজিত এবং সতেজ হয়।
* তার মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
পরিকল্পনা করতে এবং শৃঙ্খলাবদ্ধ হতে শিখুন
* বাচ্চাদের যখন কোনো কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তারা তাদের খেলাধুলা, টিভি অনুষ্ঠান ইত্যাদি অনুযায়ী পরিকল্পনা শুরু করে, যাতে তারা কাজও করতে পারে এবং তাদের রুটিন ঠিক রাখতে পারে।
* এভাবে ছোটবেলা থেকেই তারা পরিকল্পনা করতে শেখে।
* সাফল্যের জন্য শৃঙ্খলা অপরিহার্য।
* বাচ্চারা যখন কাজ করে, তখন তাদের এমনভাবে তাদের সময় পরিকল্পনা করতে হবে যাতে তারা খেলাধুলার জন্য এবং পড়াশোনার জন্যও সময় পায়।
* শৃঙ্খলা ছাড়া এটা সম্ভব নয়।
* এইভাবে তাদের কাজ এবং খেলা উভয়ের প্রতি শৃঙ্খলাবদ্ধ হতে হবে, অন্যথায় ভারসাম্য থাকবে না।
পিতামাতা গাইড
* শিশুর বয়স ও সামর্থ্যের দিকে খেয়াল রাখুন।
* কাজ দেওয়ার আগে আপনার সন্তানের বয়স, শক্তি ও সামর্থ্যের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি এবং তারপর সেই অনুযায়ী কাজ দিতে হবে।
* নির্দেশ দেওয়ার সময় সঠিক শব্দ ব্যবহার করুন।
* আপনি যে কাজটি করতে চান, তা সঠিক শব্দে পরিষ্কারভাবে বলুন, যেমন- 'আপনার ঘর পরিষ্কার করুন' বলার পরিবর্তে এইভাবে বলুন- 'আলমারিতে জামাকাপড় রাখুন, বই শেলফে রাখুন, ঝুড়িতে খেলনা রাখুন। ' এভাবে সে বুঝবে কীভাবে ঘর পরিষ্কার করতে হয়।
* উদাহরণ দিয়ে শেখান- আপনি যেভাবে কাজ করতে চান, প্রথমে আপনি নিজেই সেইভাবে কাজটি করুন, যাতে বাচ্চারা দেখে শিখতে পারে।
* বাচ্চাদের আপনার সাথে কাজ করান। ধীরে ধীরে তারা আপনার জিজ্ঞাসা ছাড়াই একা কাজ শুরু করবে।
No comments: