Politics

[Politics][bleft]

West Bengal

[West Bengal][grids]

World

[World][bsummary]

National

[National][twocolumns]

এই মহিলা যেই বাড়িতে কাজ করতেন সেখানকার লোক কেন অসুস্থ হত

 


 ম্যারি ম্যালন, যা টাইফয়েড মেরি নামে পরিচিত,৭০-এর দশকে অনেকের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বলা হয় যে, মেরি, যিনি তার সময়ের সেরা রাঁধুনি ছিলেন, মৃত্যু তৈরির কাজ করতেন। এটাকে বলা হয়  টাইফয়েড জ্বরের প্যাথোজেন যা যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়ে।তিনি বিশ্বাস করেন যে তিনি তার রান্নার কর্মজীবনে ৫১ জনকে টাইফয়েডে আক্রান্ত করেছিলেন।তাদের মধ্যে তিনজন মারাও গিয়েছিলেন।স্বাস্থ্য আধিকারিকরা তাকে দুইবার গৃহবন্দী করেও রেখেছিলেন। ১৯০০ থেকে ১৯০৭ পর্যন্ত মেরি কাজ করেছিলেন নিউ ইয়র্ক শহরের প্রায় ৭ টি বাড়িতে বাবুর্চি হিসেবে। যেসব বাড়িতে তিনি বাবুর্চি হিসেবে কাজ করতেন সেই বাড়ির বাসিন্দারা এক সপ্তাহের মধ্যে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হন।


 মেরি সম্পর্কে আশ্চর্যজনক বিষয় হল তিনি যেখানেই বাবুর্চি হিসেবে কাজ করতেন, সেখানে মানুষ টাইফয়েড জ্বরে ভুগছিল।  এই কারণেই স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সন্দেহ মেরির কাছে গিয়েছিল। অনেক গবেষণার পর ডাক্তাররা জানতে পারেন কিভাবে টাইফয়েড ছড়ায়। টাইফয়েড মেরি জনসম্মুখে আসে যখন ১৯০৬ সালে নিউইয়র্ক সিটিতে একটি পরিবার ভাড়া নেয়। ওই পরিবার ১০ সদস্যের ছিল, যার মধ্যে ৬ জন টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়েছিল।  আশ্চর্যজনক বিষয় ছিল যে সেই সময় পর্যন্ত সেই এলাকায় কেউ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়নি।  সেখানকার স্বাস্থ্য আধিকারিকরা তদন্ত শুরু করেন।  টাইফয়েডে আক্রান্ত পরিবারের পুরো ঘরটি উপরে থেকে নীচে পর্যন্ত পরিষ্কার করা হয়েছিল।  রোগের সংক্রমণের জন্য সবকিছু পরীক্ষা করা হয়েছিল।  তদন্তে সবকিছু ঠিক ছিল কিন্তু তাদের সবার মধ্যে একটি জিনিস ছিল যা এখনও তদন্ত করা হয়নি। এই বাড়ির রাঁধুনি ছিলেন মেরি।  যিনি রোগের প্রাদুর্ভাবের এক সপ্তাহ আগে হঠাৎ কাজ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।


আরও তদন্তে জানা যায় যে মেরি ক্রমাগত চাকরি পরিবর্তন করছিলেন। স্বাস্থ্য আধিকারিকরা তাকে একটি চলন্ত 'টাইফয়েড বোমা' নাম দিয়েছে। মেরিকে সর্বত্র অনুসন্ধান করা হচ্ছিল।  তদন্তকারী আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে, তিনি যেখানে কাজ করতেন সেখানে টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা কাকতালীয় নয়।  তদন্তকারী আধিকারিকরা জানান, তিনি যখন খাবার রান্না করতেন, তখন টাইফয়েডের জীবাণু তার হাত দিয়ে খাবারে প্রবেশ করত। অনেক প্রমাণ সহ একদিন মেরি গ্রেফতার হয়। তাকে বন্দী করে নর্থ ব্রাদার আইল্যান্ডে রাখা হয়েছিল।  মেরি যুক্তি দিয়েছিলেন যে এই সবকিছুর মধ্যে তার কোন হাত নেই।  তিনি বলেছিলেন যে তিনি ডাক্তারকে অনেকবার দেখেছেন।  তিনি বলেছিলেন যে তার কখনই টাইফয়েড ছিল না এবং কীভাবে সে এই রোগ ছড়াতে পারে।  তিনি নিউইয়র্কের স্টেট বোর্ডকে কয়েকবার আদালতে চ্যালেঞ্জও করেছিলেন।


 তিনি ১৯১০ সালে মামলাটি জিতেছিলেন এবং এই শর্তে মুক্তি পেয়েছিলেন যে তিনি আর কখনও বাবুর্চি হিসাবে কাজ করবেন না।  কিছু সময়ের জন্য তিনি লন্ড্রি হিসাবে কাজ করেছিলেন কিন্তু তাকে খুব কম বেতন দেওয়া হয়েছিল। একারণে তিনি আবার বাবুর্চি হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি প্রথমে তার নাম পরিবর্তন করেন এবং মেরি ব্রাউন নামে একটি হাসপাতালে বাবুর্চি হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯১৫ সালে ২২ জন ডাক্তার এবং কিছু নার্স টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়েছিল, যার মধ্যে দুজন মারা গিয়েছিল।  যখন বাবুর্চিকে শনাক্ত করা হয়, তখন কেবল মেরির নামই উঠে আসে। এরপর তাকে ৩০ বছর গৃহবন্দী করে রাখা হয় যেখানে ১৯৩৮ সালে ৬৯ বছর বয়সে তিনি নিউমোনিয়ায় মারা যান। তার মৃত্যুর পরেও, রহস্য রয়ে গেছে যে কিভাবে সে মানুষকে টাইফয়েডে ছড়াতে পারে,যেখানে সে কোনও দিনও সংক্রমিত ছিল না  টাইফয়েডের সঙ্গে।

No comments: