Politics

[Politics][bleft]

West Bengal

[West Bengal][grids]

World

[World][bsummary]

National

[National][twocolumns]

আখের রসের উপকার জেনে নিন


 



আখের রস সম্পর্কে একটু বিভ্রান্তি আছে৷ একদল বলেন আখের রস থেকেই চিনি তৈরি হয়, অতএব যাঁরা স্বাস্থ্য সচেতন, তাঁদের পক্ষে এটি বিষতুল্য৷ আর এক দলের বক্তব্য হচ্ছে, রাস্তায়-ঘাটে যেখানে-সেখানে আখের রস খাওয়াটা ঠিক নয়, কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মেনে তৈরি করা হলে এমনকী ডায়াবেটিস রোগীও নিশ্চিন্তে এই স্বাদ ও স্বাস্থ্যে ভরপুর পানীয়টি খেতে পারেন৷


এটা ঠিক যে, আখের রসে প্রায় ১৫ শতাংশ শর্করা থাকে, কিন্তু ভুলবেন না, সেই সুক্রোজ়, ফ্রুকটোজ় হচ্ছে প্রাকৃতিক শর্করা এবং শরীরের জন্য সেটা ভালো৷ যে কোনও ফলের রস, এমনকী স্মুদিতেও এর চেয়ে বেশি শর্করা থাকে সাধারণত৷ গরমকালে ঘামের মাধ্যমে আমাদের শরীর অজস্র পুষ্টিগুণ হারায়৷ সেই সময়ে যদি কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট, ক্লোরোফিলের মতো ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট, আয়রন, জ়িঙ্ক, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাসের মতো মিনারেলে পূর্ণ এই পানীয়ে গলা ভেজাতে পারেন, তা হলে শরীর শীতল ও পরিপুষ্ট হবে৷ আখের রস ভিটামিনের আকর, তাতে ভিটামিন এ, বি ওয়ান, বি টু, বি থ্রি আর সি-ও পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে৷ পিত্তদোষ খণ্ডনের জন্য রোগীকে আখের রস দেওয়ার নিদান পাওয়া যায় আয়ুর্বেদে৷ জন্ডিস রোগীকে আখের রস খাওয়ানোর প্রথা তো বহু বছর ধরেই মেনে আসছি আমরা! কেন দেওয়া হয় আখের রস? কারণ তা শরীরে গ্লুকোজ়ের প্রবাহ বাড়ায়, জোগান দেয় প্রয়োজনীয় এনার্জি৷ আখের রস প্রকৃতিগতভাবে অ্যালকালাইন, তা লিভারের কার্যক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে রাখে, ইলেকট্রোলাইট ব্যালান্স বজায় রাখতেও অত্যন্ত কার্যকর৷ যাঁরা পেটের সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন, তাঁরা খাদ্যতালিকায় আখের রস রাখলে নিঃসন্দেহে উপকার পাবেন৷ কারণ তা পাকস্থলীর পিএইচ ব্যালান্স বজায় রাখে৷


জানেন কি, নাছোড় ব্রণর হাত থেকে আপনাকে মুক্তি দিতে পারে আখের রস? মুলতানি মাটি আর আখের রসের প্যাক তৈরি করে সপ্তাহে তিনবার মুখে লাগাতে পারলে তৈলাক্ত ত্বক ঝকঝকে পরিষ্কার হয়ে উঠবে৷ যেহেতু আখে প্রচুর ক্যালশিয়াম থাকে, তাই নিয়মিত তা সেবন করলে দাঁত, নখ আর হাড়ের স্বাস্থ্যও খুব ভালো থাকবে৷ আখ যদি চিবিয়ে খাওয়া যায়, তা হলে আপনার মাড়ির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, দাঁতের ক্ষয় রোধ হবে, মুখের দুর্গন্ধও কমে যাবে৷


কয়েকটি বিষয়ে সতর্ক থাকুন:


১.  বাজারে আখের রস তৈরির মেশিনগুলি সচল রাখার জন্য নিয়মিত তেল দেওয়া হয়, সেটা আপনার ফলের রসে মিশে মারাত্মক বিপদ ঘটাতে পারে৷ তার চেয়ে আখের খোসাটা ছুলে বাড়ি আনুন৷ খুব ভালো করে ধুয়ে শুকনো করে ফ্রিজে রেখে দিন৷ রস খাওয়ার আগে ছোট ছোট করে কেটে ব্লেন্ডারে পিষে নিন সামান্য আদা সহ৷ তার পর ছিবড়েটা হাত দিয়ে চেপে চেপে রস নিংড়ে বের করে নিতে হবে৷ সামান্য বিটনুন আর লেবুর রস যোগ করে পান করুন৷ অন্য কোনও ফলের রসের সঙ্গে মিশিয়ে সুস্বাদু মকটেলও তৈরি করে নিতে পারেন৷


২.  আখের রস সদ্য তৈরি করে নিতে হবে৷ ফ্রিজে রাখলে ঘণ্টা দু’য়েক পরও খাওয়া চলে, কিন্তু তার পর একেবারেই চলবে না কারণ ফলের রসে তার মধ্যেই রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু হয়ে যায়৷


৩.  যাঁরা প্রতিদিন আখের রস খান, তাঁরা দিনে দু’ গ্লাসের উপরে উঠবেন না৷ একমাত্র জন্ডিস রোগী ছাড়া কারওই দিনে দু’ গ্লাসের বেশি আখের রসের প্রয়োজন হয় না৷

No comments: